

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
জাতীয় পার্টি এর সহযোগী ছাত্র সংগঠন
বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের আশা আকাঙ্খার ও প্রেরণার প্রতীক এবং বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রবর্তক আধুনিক বাংলার রুপকার পল্লীবন্ধু আলহাজ্ব হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর হাতে গড়া গণতান্ত্রিক ও শিক্ষা-শান্তি-উন্নয়ন-প্রগতি’র চেতনায় বিশ্বাসী এই সংগঠন, জাতীয় ছাত্র সমাজ। পল্লীবন্ধুর স্বপ্নের সুস্থ সমৃদ্ধ উন্নত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কর্মী তৈরীর পাঠশালা এই জাতীয় ছাত্র সমাজ। ১৯৭১ সালে লক্ষ লক্ষ শহীদদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশকে একটি দুর্নীতি-দুঃশাসন মুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিয়ে এগিয়ে যায় জাতীয় ছাত্র সমাজ।
শিক্ষার সঙ্গে বিনয়, কর্মের সঙ্গে নিষ্ঠা, জীবনের সঙ্গে দেশপ্রেম এবং মানবীয় গুণাবলির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে জাতীয় ছাত্র সমাজ অতিক্রম করেছে পথচলার ৩৭ টি বছর। সৃষ্টিলগ্ন থেকেই গণতন্ত্রের অধিকার, শিক্ষার অধিকার, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম, সর্বোপরি এরশাদ মুক্তি আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের দাবী আদায়ের আন্দোলনের চার দশকের বাংলার মানুষের সফল সাহসী সারথি হিসেবে পথ চলছে। জাতীয় ছাত্র সমাজের প্রতিটি নেতাকর্মীর মধ্যে আছে পল্লীবন্ধ এরশাদের নান্দনিকতা ও আদর্শ, আছে কাজী নজরুলের বাঁধ ভাঙার শৌর্য, আছে ক্ষুদিরামের প্রত্যয়, আছে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এর দৃঢ়চেতা মনোবল, আছে সুকান্তের অবিচল চেতনা। তাই তো জাতীয় ছাত্র সমাজ শিক্ষার অধিকার রক্ষার পাশাপাশি জাতীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক স্বার্থ সুরক্ষায় সবসময় মঙ্গলপ্রদীপের আলোকবর্তিকা হয়ে ছড়িয়ে পড়ে চার দিগন্তে। গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের দীর্ঘ পথচলায় ছাত্র সমাজ হারিয়েছে তার অনেক
নেতাকর্মীকে। এসব বীর সহযোদ্ধাই আমাদের অনুপ্রেরণা, আমাদের শক্তি, আমাদের সাহস।
যা ১৯৮৩ সালের ২৭ মার্চ জাতির এক ক্রান্তি কালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৯০ দশকের যে মুহুর্তে দেশের ছাত্র রাজনীতিতে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, ও এক বিমূর্ত আতঙ্ক বিরাজ করছিল ঠিক তখনই ‘অস্ত্র ছেড়ে কলম ধরো- শিক্ষাঙ্গন মুক্ত করো’ স্লোগান কে ধারণ করে পল্লীবন্ধু আলহাজ্ব হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ নতুন বাংলা ছাত্র সমাজ নামে ছাত্র সংগঠন তৈরী করে। রফিকুল হক হাফিজ কে আহ্বায়ক করে এই সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে। এরপর সংগঠনটি সাজ্জাদ হোসেন-শাজাহান সাজু কমিটি থেকে জাতীয় ছাত্র সমাজ নাম ধারণ করে। তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র নেতা ইকবাল হোসেন রাজু ও জহিরুল ইসলাম জহির এর কমিটিতে সংগঠনটির নাম ‘সংগ্রামী ছাত্র সমাজ’ রুপে আন্দোলন সংগ্রাম করে। এটি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ মুক্তি আন্দোলনের মুল ভুমিকা পালন করে। টাঙ্গাইলের সা’দত কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি আদনান আখতার ও সরোয়ার হোসেন টিটু’র কমিটি থেকে সংগঠনটি পূনরায় জাতীয় ছাত্র সমাজ নাম ধারন করে অদ্যাবধী দেশের ছাত্র রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।
১৬ কোটি বাঙালির প্রাণের স্পন্দন, সমৃদ্ধ নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নদ্রষ্টা, পল্লীবন্ধু, বিশ্বশান্তির অগ্রদূত, সমঅধিকারের প্রতিষ্ঠার পথপ্রদর্শক আলহাজ্ব হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে জাতীয় ছাত্র সমাজ ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যার ক্ষতি মোকাবেলায় পালন করেছে অগ্রণী ভূমিকা। সে সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দিনে তিনবেলা খিচুরী রান্না করে, ত্রান বিতরন করেছেন ছাত্র সমাজের নেতাকর্মীরা। সারারাত জেগে প্রস্তুত করেছেন খাবার স্যালাইন। সেগুলো পৌঁছে দেওয়া হয়েছে দুর্গম এলাকার মানুষের কাছে। প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের বন্যাসহ সব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জাতীয় ছাত্র সমাজ একই কার্যক্রম নিয়ে বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা মুসলিম শরনার্থীদের জন্য ত্রান নিয়ে হাজির হয়েছেন কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। এরশাদ মুক্তি আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে প্রথম সাহসী উচ্চারণ তুলেছিল এরশাদের ছাত্র সমাজের কর্মীরাই। জাতীয় ছাত্র সমাজ কাজী নজরুলের কবিতার মতোই ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী; আর হাতে রণ তূর্য।
১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলেছিল ছাত্র সমাজ। আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি দুস্থ শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, রক্তদান, বৃক্ষরোপণ, পথশিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ পাঠদান কর্মসূচি জাতীয় ছাত্র সমাজের দীর্ঘদিনের চর্চা।
জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব জি এম কাদের, এম.পি নির্দেশনা মোতাবেক-‘মেধা ও দেশপ্রেম দেখেই আগামী দিনের ছাত্র সমাজের নেতৃত্ব নির্বাচন করতে হবে, যারা ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে দেশ, সমাজ ও দলের জন্য অবদান রাখতে পারবে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো থেকে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি এখন জাতীয় পার্টির দিকে। সাধারণ মানুষ এ দলকে আরও শক্তিশালী দেখতে চায়। আগামী দিনে জাতীয় পার্টিতেই আস্থা রাখতে চায়। তাই দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ছাত্র সমাজই শক্তিশালী করবে জাতীয় পার্টিকে। তাইতো ভবিষ্যতেও ছাত্র সমাজ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ শিক্ষাসেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তাকল্পে কাজ করবে এবং জাতীয় পার্টির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করে লক্ষে করবে।
নবীন মেধাবীদের মেধা দেশ গড়ার কাজে লাগুক, স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে বিধৌত হোক নতুন প্রজন্মের বিবেক ও চেতনা। অনাগত প্রজন্মের লড়াই হোক সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আর মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে। পল্লীবন্ধুর আদর্শের নতুন বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে, সব অশুভ শক্তিকে পেছনে ফেলে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে, সমঅধিকারের দেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাবে জাতীয় সমাজ। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক। পল্লীবন্ধু এরশাদ অমর হউক। জাতীয় ছাত্র সমাজ, জিন্দাবাদ